কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির চমক হতে যাচ্ছেন সৈয়দ মো. অসীম

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আসন্ন একাদশ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে এবারো বিএনপির চমক হতে যাচ্ছেন দলের ত্যাগী নেতা রাজপথের অকুতোভয় সৈনিক সৈয়দ মো. অসীম। কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত ইটনা, মিঠামইন আর অষ্টগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন। আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য নেতা হিসেবে সৈয়দ মো. অসীমের দিকেই ঝুঁকে পড়ছেন। সৈয়দ অসীম এ আসনে বিএনপির কোনো পদ পদবিতে না থাকলেও তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতিটি কর্মকাণ্ডে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকেন। এমনটি জানিয়েছে দলটির একাধিক নেতা নেতা। তারা বলেন, সর্বশেষ কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ মাঠে বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি  চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সেই জনসভায় তার নেতৃত্বে বিশাল শোডাউন, সঙ্গে রকমারী ব্যানার ফেস্টুনে সবার দৃষ্টি কাড়েন।

স্থানীয় বিএনপির নেতারা এ আসনে অসীমকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলের হাইকমান্ডের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন। তাদের অনুরোধের পর হাইকমান্ড গ্রিন সিগন্যাল দেয়ার পর তিন উপজেলার এক প্রান্ত অন্যপ্রান্তে চষে বেড়াচ্ছেন অসিম। সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে অসীম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ও বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি সুসংগঠিত করতে অবিরাম কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি ইটনা, মিঠামইন আর অষ্টগ্রাম এলাকাতে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে নেতাকর্মীদের পাশে রয়েছেন। তাদেরকে সহযোগিতা করছেন, হামলা, মামলাসহ সব বিপদ-আপদে তাদের পাশে রয়েছেন সৈয়দ মো. অসীম।

স্থানীয় নেতারা বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি মনোনয়ন লাভের আশায় নিজ নির্বাচনী এলাকার সমাজ উন্নয়নে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চষে বেড়াচ্ছেন। তাকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন এ আসনের স্থানীয় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী। দলটির একাধিক স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে এবং সম্প্রতি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার জন্য অতীতে বহুবার আহ্বান জানিয়েছেন ইটনা, মিঠামইন আর অষ্টগ্রাম বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে অসীম বলেন, দল থেকে মনোনয়ন পেলে এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকাবাসীর কল্যাণে সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে দেশের মধ্যে আগামীতে নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করার ইচ্ছা আছে। তিনি বলেন, মনোনয়নের প্রত্যাশা তো থাকবেই। তবে আমি এখন মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছি না। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্তির আন্দোলনেই ইটনা, মিঠামইন আর অষ্টগ্রাম হচ্ছে আমার কাছে বেশি প্রাধান্য। আর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমি এলাকায় দুর্বার আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির ঘোষিত হওয়ার পর থেকে আমি নিয়মিত এলকাতে অবস্থান করছি। পাশে দাঁড়িয়েছি নেতাকর্মীদের। সব কর্মসূচি পালন করার জন্য এখন মাঠে আছি। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করে ছাড়ব। আর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আগামীতে বিএনপিকে ক্ষমতায় না আনা পর্যন্ত মাঠ ছাড়ব না। দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে রয়েছেন জানিয়ে অসিম আরো বলেন, দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় করা ছাড়া সামনে আমাদের আর কোনো রাস্তা নেই।

এদিকে সৈয়দ অসীম  এই আসনে উপনির্বাচনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ছেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবার নজর কাড়েন। সেই থেকে আওয়ামী লীগ বিরোধী জোটের সঙ্গে তার আরো গভীর সখ্য তৈরি হয়। ইতিমধ্যে দলটির অধিকাংশ সমর্থকদের আস্থা অর্জন করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। এ ছাড়াও তরুণ যুবসমাজের বিশাল সমর্থন ও সামাজিক ও মানবিক কাজ করে ভোটের রাজনীতিতে সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছেন তিনি।

এদিকে স্থানীয়ভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত ইটনা, মিঠামইন আর অষ্টগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বিগত নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ছিলেন ফজলুর রহমান। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা। এর আগে তিনি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সম্পাদক পদে ছিলেন। আবার জরুরি সরকারের সময় তিনি ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর পিডিপিতে যোগ দেন। জীবনের একটি অংশ তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও ব্যয় করেন বলে জানা যায়। বারবার দল বদলে পারদর্শী ফজলুর রহমান এলাকায় কর্মীদের মাঝেও বিতর্ক সৃষ্টি করে যাচ্ছেন বলে কর্মীদের অভিযোগ রয়েছে।

এই সুযোগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের পাশে থেকে নিজেকে সম্ভাবনাময় নেতা হিসেবে সৈয়দ মো. অসীম নিজেকে গড়ে তুলেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান বিগত ১৯৯৬ সাল থেকেই এই আসনে নির্বাচন করে বারবারই পরাজিত হয়েছেন। বর্তমানে তৃণমূল কর্মীরা তার ওপর কোনো ভরসাই রাখতে পারছেন না।

কারণ বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, অতীতের দলগুলোর প্রতি তার মোহ এখনো কাটেনি। এ ছাড়াও জামায়াত শিবিরকে তিনি সাপের সঙ্গে তুলনা করলে এলাকায় তুমুলভাবে বিতর্কের ঝড় ওঠে। বিএনপি রাজনীতিতে তার গতিবিধিও কর্মীরা ভালো চোখে দেখছে না। এ ধরনের নানা কারণে কর্মীদের সঙ্গে তার একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়ে আছে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, বিএনপি হাইকমান্ড তৃণমূলের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এই আসনে একজন যোগ্য প্রার্থী দেবেন। সেই প্রার্থী হচ্ছেন সৈয়দ মো. অসীম।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর